নেত্রকোনায় বরো ধানের বাম্পার ফলন, ফসল কাটায় ব্যস্ত কৃষক
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নেত্রকোনায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের শীষে দক্ষিণা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে কৃষকের হাজারো স্বপ্ন। কৃষকের ঘাম ঝড়ানো স্বপ্নের সোনালী ফসল কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ভালো ফলনে খুশি কৃষাণ-কৃষাণীরা।
সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা ও হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, ঝিরঝির হাওয়ায় দোল খাচ্ছে বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে পাকা ধান। জেলার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই চলতি বরো মৌসুমে ধানের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছ। কৃষকের স্বপ্নের ধান বর্তমানে সোনালী রং ধারণ করেছে। পাকা ধানের গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে। গ্রামীণ জনপদ জুড়ে এখন শুধুই ব্যবস্থা। কেউ ধান কাটায়, কেউ মারাইয়ে, কেউ খর শুকাতে আবার কেউ ধান সেদ্ধতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা ও হাওরাঞ্চলে কৃষকেরা জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি মৌসুমে আমাদের এলাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফসল ফলন হয়েছে। এ বছর পর্যাপ্ত সার এবং ঔষধের পাশাপাশি সেচের জন্য বিদ্যুৎ ঠিকমত পাওয়ায় বোরো ধান উৎপাদনে কোনো সমস্যা হয়নি। বৈশাখ মাস অর্থাৎ নতুন বছরের শুরু থেকে হাওরাঞ্চলসহ কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। উঁচু এলাকা গুলোতে পুরো দমে চলছে ধান কাটার উৎসব।
তারা আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে এমন ধান হয়নি। তবে এবারের আবাদে সারের মুল্য ও কৃষি শ্রমিকের মূল্য একটু বেশি। তাই, বাজারে ধানের মূল্য বেশি হলে বোরো ধান চাষে লাভবান হওয়ার আশাবাদী তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, জেলায় এবার ১ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫ হেক্টর জামিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে এবার এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকলে থাকায় এ বছর লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও বেশি ধান অর্জিত হয়েছে। ধান চাষ বৃদ্ধি করা জন্য কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে উন্নত মানের ধানের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সেই সাথে ধানে পোকামাকর ও ব্রাষ্ট ভাইরাস না থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য এ বছর বিভিন্ন এলাকায় ফসল তাড়াতাড়ি ঘরে তুলতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের যেন ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়। তাই সরকারি ভাবে ন্যায্য মূল্যে ধান সংগ্রহ হচ্ছে এবং পাশাপাশি বাজার মনিটরিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।



আপনার মতামত লিখুন