চাঁদপুরে খেলাফত মজলিসের গন সমাবেশ
সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী, চাঁদপুর
আমরা পালাইনি; পালিয়েছে ইতিহাসের গণহত্যাকারী, খুনী, জালিম শেখ হাসিনা
………….আল্লামা মামুনুল হক
হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, আমরা পালাইনি; পালিয়েছে ইতিহাসের গণহত্যাকারী, খুনী, জালিম শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। হেফাজত কখনো পালিয়ে যাবেনা, এ দেশে ইসলাম বিরোধী কোনো নাস্তিকবাদী চক্রান্ত বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। আগামীর বাংলাদেশ পরিচালনা করবে হেফাজত।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৪ টায় চাঁদপুর শহরের হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে ‘শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের দাবি ও নৈরাজ্যেবাদ প্রতিরোধে’ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী আ’লীগ সরকার বিনা কারণে গুলি করে পাখির মত মানুষ হত্যা করেছে। ওই জালিম সরকার ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে শাপলা চত্ত্বরে রাতের আঁধারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে নবী প্রেমিক মুসলমানদের প্রার্থনারত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করেছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল গঠিত হয়েছে। শাপলা চত্ত্বরের খুন, চট্টগ্রামের হাঁটহাজীর খুন, ২৪ সালের ছাত্র-জনতা খুনসহ সকল খুনের বিচার করা হবে এ বাংলার মাটিতে। হেফাজত অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে পারে, কিন্তু আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ইমানহরণ করার চেষ্টা করা হলে তাদের চেয়ে কঠোর আর কেউ হবে না।

আল্লামা মামুনুল হক বলেন, ছাত্র জনতা ও আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ হত্যার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে ধরে এনে বাংলার মাটিতে বিচার করতে হবে। যদি সেই বিচার করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়। জনতার আদালতে তাদেরকে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাড় করাতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার তার দল আওয়ামী লীগ বিগত ১৬বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ মানুষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের রাজনীতি করেছে। জুলাই বিপ্লবের অভূতপূর্ব ঐক্য বিনষ্ট করতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের শত্রুরা বিদেশের মাটিতে বসে আবার ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে। শেখ হাসিনা এখন গিয়ে খুনের নেশায় মাতাল হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সঙ্গে আখরা করেছে। যদি সেখান থেকে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় হস্তেক্ষেপ করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় দূতাবাস থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের যারা বিগত ১৫ বছর পর্যন্ত হাতুরিলীগের ভূমিকা পালন করেছেন মনে রাখবেন এখন বাংলাদেশ আর সেই ১৬ বছর আগের ফ্যাসিবাদি পরাধীন বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশে যদি কোন নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করা হয় তাহলে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।
হেফাজত ইসলাম চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওঃ লিয়াকত হুসাইন এর সভাপতিত্বে ও চাঁদপুর জেলা যুব মজলিসের সহ-সভাপতি মাওলানা নুরে আলমের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিস, চাঁদপুর জেলা শাখার সমাজ জল্যাণ সম্পাদক, মাওলানা মোজ্জামেল মিয়াজী, সদর উপজেলার সভাপতি মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, সহ-সভাপতি মাওলানা আবু ইউছুফ, সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল কাদের, ছাত্র মজলিস, চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক হাফেজ ইসমাঈল, চাঁদপুর শহর খেলাফত মজলিসের সেক্রেটারী মাওলানা নুরুল ইসলাম, খেলাফত যুব মজলিস, চাঁদপুর জেলার সাবেক সভাপতি, হাফেজ রুহুল আমিন নেয়ামত, খেলাফত যুব মজলিস, চাঁদপুর জেলার সভাপতি মাওলানা তারেক হাসান, খেলাফত মজলিস, চাঁদপুর জেলা শাখার সমাজ জল্যাণ সম্পাদক, মাওলানা মোজ্জামেল মিয়াজী, সদর উপজেলার সভাপতি মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, সহ-সভাপতি মাওলানা আবু ইউছুফ, সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল কাদের, ছাত্র মজলিস, চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক হাফেজ ইসমাঈল, চাঁদপুর শহর খেলাফত মজলিসের সেক্রেটারী মাওলানা নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস, চাঁদপুর জেলার সাবেক সভাপতি, হাফেজ রুহুল আমিন নেয়ামত, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস, চাঁদপুর জেলার সভাপতি মাওলানা তারেক হাসান।
শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের দাবি ও নৈরাজ্যেবাদ প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অংশ নিতে জুমার আগ থেকেই হেফাজত ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। বিকেলে কানায় কানায় মাঠ পূর্ণ হয়ে যায়। প্রায় ১০ সহস্রাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ আল্লামা মামুনুল হকের বক্তব্য শুনতে সমাবেশে জমায়েত হয়।



আপনার মতামত লিখুন