তরুণদের রাজনীতিমুখী করতে হলে শ্রমিক সংগঠনগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি: মোঃ ইব্রাহিম ফরাজি
চট্টগ্রাম বিভাগে শ্রমিক রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসা শ্রমিক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম ফরাজি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বর্তমানে তরুণরা রাজনীতি থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে—তবে এর মানে এই নয় যে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। বরং এখনই সময় তরুণদের শ্রমিক সংগঠনে সম্পৃক্ত করার। কারণ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে শক্তিশালী নেতৃত্ব গঠনের জন্য নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।”
তিনি বলেন, “শ্রমিকদল শুধু অতীতমুখী সংগঠন নয়, এটি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রও। সংগঠনের কাঠামো ও কাজের ধরনে আধুনিকতা আনলেই তরুণরা আবার আগ্রহ দেখাবে।”
বিগত সরকারের আমলে মামলা-হয়রানিতে চট্টগ্রামে শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা অতিষ্ঠ
চট্টগ্রামে শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও প্রশাসনিক হয়রানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই অঞ্চলে আমাদের প্রায় প্রতিটি কর্মসূচির পরেই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হোতো। রাস্তায় নামলেই পুলিশের গ্রেফতারের তালিকায় নাম থাকতো সবসময়। এটি একটি সংগঠিত দমন নীতি।”
তিনি জানান, এসব হয়রানির বিরুদ্ধে দল কেন্দ্রীয়ভাবে আইনগত সহায়তা দিছেন এবং আগামীতেও দিবেন ইনশাআল্লাহ এবং প্রত্যেকটি ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছিলো।
তরুণ নেতাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যাওয়ার সুযোগ কতটা?
এই প্রশ্নের উত্তরে ফরাজি বলেন, “চট্টগ্রামের মাটি সবসময় আন্দোলনের শক্ত ঘাঁটি ছিল। এখানকার তরুণ নেতাদের দক্ষতা আছে, মাঠের অভিজ্ঞতা আছে। তবে তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পৌঁছাতে হলে দলীয় কাঠামোয় স্বচ্ছতা ও মেধার মূল্যায়ন আরও বাড়াতে হবে। আমরা চাই, চট্টগ্রাম থেকে আগামীতে জাতীয় নেতৃত্বে আরও তরুণ মুখ আসুক।”
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ও ভবিষ্যতের প্রস্তুতি
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ নির্বাচন জনগণের অধিকার হরণ করেছে। ভোটের আগের রাতেই ফল নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা একে সুষ্ঠু বলি না।”
ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিয়ে বলেন, “২০২৬ সালের নির্বাচনকে ঘিরে আমরা মাঠে নামছি। শ্রমিকদের অধিকার ও ভোটাধিকার রক্ষায় রাজপথেই লড়াই হবে।”
নেতৃত্বের বিভাজন ও চট্টগ্রামের বাস্তবতা
শ্রমিকদলে বিভাজনের প্রশ্নে ফরাজি অকপটে বলেন, “দল বড় হলে ভিন্নমত থাকবে। তবে সেটা যেন আদর্শ ও নিয়মের বাইরে না যায়, সেটাই জরুরি। চট্টগ্রামে মাঝে মাঝে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়, কিন্তু আমরা তা দ্রুত সমাধান করি।”
ব্যক্তিগত ত্যাগ ও হয়রানি
নিজের রাজনীতিক জীবনের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, “আমি বহুবার গ্রেফতার হয়েছি, রাতের আঁধারে বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ। চাকরি,ব্যাবসা হারিয়েছি, পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় থেকেছি। কিন্তু এসব আমাকে থামাতে পারেনি। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ই আমার রাজনীতির উদ্দেশ্য।”
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী তরুণদের অনুপ্রেরণা, জনগণ তাঁকে দেখতে চায় আগামী নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্ব প্রসঙ্গে মোঃ ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, “আমির খসরু ভাই শুধু চট্টগ্রামের না, দেশের রাজনীতিতে এক পরীক্ষিত নাম। তিনি আমাদের তরুণদের জন্য প্রেরণা, সাহস আর রাজনৈতিক শুদ্ধতার প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষ তাঁর নেতৃত্বে আস্থা রাখে। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাঁকে অথবা তার সুযোগ্য সন্তান ইসরাফিল খুসরু মাহামুদ চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় সাধারণ জনগণ। আমরা বিশ্বাস করি, তিনিই পারবেন এই অঞ্চলকে নতুনভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে।”



আপনার মতামত লিখুন