খুঁজুন
রবিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নৌকা ডুবিয়ে লাপাওা ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের  নেতা-কর্মীরা,

মোঃ আবদুল রহিম, ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৯:০৩ অপরাহ্ণ
নৌকা ডুবিয়ে লাপাওা ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের  নেতা-কর্মীরা,
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা-কর্মী লাপাত্তা। এ কাতারে রয়েছে জেলার তিনটি আসনের সাবেক এমপি, সকল উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও প্রায় সব ইউপি চেয়ারম্যান। পৌরসভার কাউন্সিলর ও ইউপি সদস্যরাও দিয়েছে গা ঢাকা।
জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা কর্মী গ্রেপ্তার করা হলেও বিভিন্ন অপকর্মের হোতা, অমকর্মের সহযোগীরা রয়েছে লাপাত্তা। যাদের দাপটে দলের ত্যাগী ও প্রবীন নেতারা একসময় তটস্থ থাকতেন তারা নিজেরা এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। প্রবীন ও ত্যাগী নেতারা বলছেন, নৌকা ডুবিয়ে হাইব্রিড নেতারা গা ঢাকা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের অভিযোগ, যারা বালুমহাল, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, বাসস্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড, শালিস বাণিজ্য, ব্যবসায়ী সংগঠনে ব্যানারে বাণিজ্য, দখল বাণিজ্য, মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণ করতেন ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁরা দলের বিপদ দেখে সটকে পড়েছেন। অথচ সাত মাস আগেও রাজনীতিতে ছিল তাদের একচেটিয়া দাপট। তাদের কথার বাহিরে কারো কোন কিছু বলার সাহস পর্যন্ত ছিলো না। তারা টাকা কামাই করে বিদেশের মাটিতে গিয়ে পিকনিক মুডে আছেন। দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা তার প্রায়শ্চিত্ত দিচ্ছেন। দলের লাখকর্মী গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। তাদের হাতে কোন টাক-পয়সা নেই। তারা মানবেতর জীবযাপন করছেন। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ও যারা দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতিত ছিলেন, তারা এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী এখন ঢাকা-চট্টগামসহ বিভিন্ন শহরে রিকশা ও টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পরিবারের সাথে দেখা করতে পারছেন না। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের অভিযোগ শীর্ষ নেতাদের পাপের ফল তারা ভোগ করছে। শীর্ষ নেতারা যদি অপকর্ম না করতেন তাহলে হয়তো তাদের এ বিপদে পড়তে হতো না।
ছাত্রদের ব্যানারে টানা ৩৬ দিনের আন্দোলনে ৫ আগস্ট ২০২৪ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আওয়ামী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন- যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ছাড়াও শতাধিক সংগঠনের আতœপ্রকাশ হয়। দলীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের বিরুদ্ধে বারবার বলার পরও কোন সংগঠনতো বন্ধ হয়নি উল্টো নতুন নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে সুবিধাভোগীরা। আওয়ামী লীগ পতনের পর তাদের সবাই দিয়েছেন গা ঢাকা।
এসব সুবিধাভোগী সংগঠনের পাশাপাশি মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দও এসময় ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করতো। ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামের খুনি আবিদের মা বড় মনিও হয়ে উঠে রাজনীতির নিয়ন্ত্রক। হঠাৎ করে ফেনীর রাজনীতিতে এসে তিনি অল্প কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে যান জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান। তাকেও তার চামচারা ‘মা’ বলে সম্বোধন করে পোস্ট দেয়া শুরু করে। কারণ তিনি এমপি নিজাম হাজারীর সম্পর্কে মামী হন।
ক্ষমতায় থাকাকালীন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা বিভিন্ন অফিসে প্রভাব দেখিয়েছেন। তাদের তদবির, টেন্ডারে ভাগ দেওয়া নিয়ে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। কোন একটা প্রকল্প আসার অনেক আগেই ঠিকাদারী কাজ হয়ে যেত বিক্রি। জেলার কয়েকজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার আশায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অগ্রীম কোটি টাকা দিয়ে এখন নিজে ফকির হয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে এই নেতা-নেত্রীরা এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে তারা নানা অপকর্ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ ছিলো না। তবে ফেনীতে অন্যায়কারী প্রভাবশালী বিরুদ্ধ নিউজ করে মিডিয়াকে তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, ফেনী থেকে লাপাত্তা হওয়া এসব নেতাকর্মীদের বেশির ভাগ বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। সৌদি আরব ও ডুবাইতে রয়েছেন কয়েকজন শীর্ষ নেতা। ইউরোপ ও আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন কয়েক নেতা ও জনপ্রতিনিধি। যারা দল করে তেমন কোন সুবিধা আদায় করেননি তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় আতœগোপনে আছেন। অনেকে মামলার ভয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। আতœগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, তারা কোন অপরাধ করেনি, চাঁদাবাজী করেনি, অন্যের হক নষ্ট করেনি, কারো কানো ক্ষতি করেনি। দলের পদ-পদবী থাকায় তার বিপদে পড়েছেন। দল করা অন্যায় নয়। যত দিন বেঁচে থাকবো দল করে যাবেন বলেও তারা জাজান। যারা আওয়ামী লীগের সামান্য কর্মী ও সমর্থক তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরাও বাড়িতে থাকলে মামলা ও হামলার শিকার হতে পারি সেজন্য প্রতিপক্ষের চোখের আড়ালে রয়েছি বলে মন্তব্য করেন নেতাকর্মীরা।
ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, একাডেমির গরু কামাল, মধুপুরের বাদলদের মতো লোককে কেন কাউন্সিলর বানাতে হবে। এতে কি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে না বৃদ্ধি পয়েছে এ প্রশ্ন রাখছি শীর্ষ নেতাদের কাছে? দলের আরেক নিবেদিত কর্মী বলেন, ধলিয়ার মুন্সির কাছে এমন কি আছে তাকে চেয়ারম্যান বানাতে হবে? দলীয় নেতকর্মীরা বলেন, অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত, মুর্খ, চাঁদাবাজ, ডিগবাজী দেয়া নেতা ও সন্ত্রাসীদের জনপ্রতিনিধি বানানো হয়েছে। তার ব্যর্থ হওয়ার পরও বারাবার তাদের একক প্রাথী হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন দিতে মানা করার পরও দল থেকে অযোগ্যদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তারা নির্বাচিত হয়ে যে যার মতো বাণিজ্য ও লুটপাট করেছেন। এ কারনে দলের নেতৃবৃন্দের সাথে তৃণমূলের কোন সম্পর্ক ছিলো না। হাইব্রিডরা নৌকাকে ডুবিয়ে নিজেরা লাপাত্তা হয়েছেন। তারা জানান, শীর্ষ নেতা, আঞ্চলিক নেতা, পাড়ার নেতাসহ সব নেতা ও জনপ্রতিনিধি সে যে লাপাত্তা হয়েছে তারপর থেকে তাদের আর কোন যোগাযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তারা সবাই এব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ইসলামীপন্থী শাসনে মুসলিম-অমুসলিম সকলের জান-মাল-মর্যাদা সমানভাবে সুরক্ষিত থাকবে -পীর সাহেব চরমোনাই

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী, চাঁদপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ণ
   
ইসলামীপন্থী শাসনে মুসলিম-অমুসলিম সকলের জান-মাল-মর্যাদা সমানভাবে সুরক্ষিত থাকবে -পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, দেশে অনেক দলের শাসন দেখেছে, অনেক আদর্শের শাসন দেখেছে। সেসকল শাসনে দেশে দুর্নীতি বেড়েছে, সন্ত্রাস বেড়েছে, হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে, মানুষের সার্বিক আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থান দেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে।

এখন সময় দেশকে আমাদের হাজার বছরের লালিত ইসলামের আদর্শে গড়ে তোলার। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারি তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ধিক্কার দেবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, সরকার একটি দলকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে গণদাবি উপেক্ষা করে একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চাঁদপুর-৩ সংসদীয় আসন কর্তৃক আয়োজিত নির্বাচনী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ সব কথা বলেন।

চাঁদপুর-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ, জেলা সভাপতি হাফেজ  মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, সেক্রেটারি কেএম ইয়াসিন রাশেদসানী।

অন্যান্যের মধ্যে ক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহজামাল গাজী সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেলাল আহমাদ, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ডাক্তার বেলাল হোসেন, হাইমচর উপজেলা সভাপতি ডাক্তার শফিউল্লাহ, শহর সভাপতি মাওলানা আবদুল্লাহ আল-মামুন, জেলা ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ডিএম ফয়সাল।

চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় চাঁদপুর সদর, শহর ও হাইমচরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ২ সহস্রাধিক নেতা উপস্থিত হন।

বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনে প্রয়োজনীয় প্লাটফর না থাকায় যাত্রীদের পোয়াতে হয় চরম দুর্ভোগ

মুখলেছুর রহমান হীরা, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
   
বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনে প্রয়োজনীয় প্লাটফর না থাকায় যাত্রীদের পোয়াতে হয় চরম দুর্ভোগ
যতটুকু জানা যায় ১৯৩০-৩১সালে সম্পদের প্রাচুর্যে  মুগ্ধ হয়ে  অত্র এলাকায় ব্রিটিশ সরকার  রেললাইন্স স্থাপন করেন। উক্ত স্টেশনটি দীর্ঘদিন ধরেই  ঐতিহ্য বহন করে আসছে। আগে বারহাট্টা থানা বর্তমান  উপজেলায়  বিভিন্ন ইউনিয়ন গুলোতে  কোন রাস্তাঘাট এবং যানবাহন ছিল না  তখন পায়ে হেঁটে বারহাট্টা স্টেশনে এসে অনেক যাত্রী রেলগাড়িতে চলাচল করতো। ওই সময় এই এলাকার সকল শ্রেণীর  লোকজনের একমাত্র চলাচলের  বাহন ছিল রেলগাড়ি।
বারহাট্টা  যদিও উপজেলা  কিন্তু উন্নয়নের দিকে  এটি একটি উন্নত গ্রাম। উন্নয়নের দিকে  বারহাট্টা উপজেলা অনেক  পিছিয়ে। বারহাট্টা শহরটি এক গলির শহর ।
শহরের উত্তর পাশে কংস নদী  আর দক্ষিণে  রেললাইন
এই দুইয়ের মাঝে বারহাট্টা বাজার। বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ  ও বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশন পাশাপাশি অবস্থিত।এছাড়াও  বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার  ফেডারেশন  এর  নেত্রকোনা জেলার  একমাত্র সদস্য কংস থিয়েটার  বারহাট্টা। বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশন  ও বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ  এর মাঝখানে  অবস্থিত।  অত্র এলাকার মানুষের  সময় কাটানোর মতো   কোন জায়গা না থাকায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে কিছু মানুষ এখনোও বারহাট্টা স্টেশনে এসে চায়ের স্টল গুলোতে চা খায়  সময় কাটায়।
কারণ অন্যান্য স্টেশনে তুলনায় পরিবেশগত দিক থেকে  বারহাট্টা স্টেশন  অনেক সুন্দর ও নিরাপদ।
ব্রিটিশ সরকার রেললাইন্স স্থাপনের পর আর রেললাইন এবং বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনের  তেমন কোন সংস্কার হয়নি। ২০০৯-২০১০ সালের দিকে  ব্রিটিশ সরকারের সেই পুরনো লাল ইটের নকশায় বানানো  এক রুম বিশিষ্ট বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনের ঘরটি  ভেঙে  নতুন নকশায় স্টেশন  ও রেল লাইন  সংস্কারের কাজ করে। স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উপরে পূর্ব পাশে একটি বৃদ্ধ জাম গাছ  এবং পশ্চিমে বিশাল আকারের একটি বৃষ্টি গাছ থাকায়  প্লাটফর্মের পুরোটা জুড়ে  উপরের যাত্রী ছাউনি করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে  দুই দিকে প্রায় বর্তমান প্লাটফর্মের অর্ধেক অংশের বেশি যাত্রী ছাউনি বিহীন  অবস্থায় থেকে যায়।  তাই বৃষ্টি এলেই  স্টেশনের  অফিস রুম ও অল্প যাত্রীবিহীন ছাউনির নিচে  মানুষ গজা -গাজি করে  আশ্রয় নেয়। একটু বৈরী আবহাওয়া  যাত্রীরা নিরাপদে  স্টেশনে অবস্থান করতে পারে না।
বর্তমানে হাওর এক্সপ্রেস  ও  মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ঢাকা গামী  দুটি আন্তঃনগর  ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা গামী  মালিকানাধীন  কমিউটার ট্রেন  চলাচল করে। দীর্ঘদিন যাবত ইঞ্জিন সমস্যার কারণে লোকাল ট্রেনগুলো   বন্ধ আছে। এতে  এলাকার  ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী,   চাকুরীজীবী  সহ-সাধারণ মানুষ মারাত্মক সমস্যা আছেন। এছাড়াও  ১৪ বগীর
আন্তঃনগর ট্রেনের ৬ টি বগীর পর সবগুলো বগি  প্লাটফর্মের বাহিরে থাকে। এতে যাত্রী সাধারনের ট্রেনে উঠা-নামার সমস্যা সৃষ্টি হয়।  বিশেষ করে  মহিলা যাত্রীদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা বেশি সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সময়  প্রায়ই যাত্রীদের পরে যেতে  দেখা যায়।  বারহাট্টা উপজেলা সহ
পার্শ্ববর্তী আটপাড়া, মধ্যনগর, ও কলমাকান্দা  উপজেলার  অনেক যাত্রী  বারহাট্টা রেলস্টেশন কে  চলাচলের জন্য  ব্যবহার করে থাকেন। বারহাট্টা উপজেলার
নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল আহসান সরকারি বরাদ্দ হতে
বারহাট্টা রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী ছাউনিতে  সিলিং ফ্যানের   ও  পুরু স্টেশন এলাকায়  সিসি ক্যামেরা ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

বাংলাদেশের আলো’র ১৮ বছর পদার্পণে চাঁদপুরে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী, চাঁদপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০০ অপরাহ্ণ
   
বাংলাদেশের আলো’র ১৮ বছর পদার্পণে চাঁদপুরে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার ১৮ বছর পদার্পণে চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি সাইদ হোসেন অপু চৌধুরীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায়
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম এন জামিউল হিকমা

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আলো পত্রিকা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পাঠক মহলে সারা জাগিয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে পত্রিকাটি জনগণের আস্থা অর্জনে সর্বদা কাজ করবে বলে বিশ্বাস করি। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে দৈনিক বাংলাদেশের আলো আরও এগিয়ে যাবে বলে মনে করি। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও জাতি গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরো বলেন দেশ ও জনগণের উন্নয়নে সাংবাদিকরা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে।এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিশুদের ভেতরে আমাদের সংস্কৃতির চেতনা জাগাতে হবে। তাদের চোখে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বুকে নিয়ে ক্ষুদে চিত্রশিল্পীরা চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক
আলহাজ্ব মোশারফ হোসাইন হাওলাদার।

তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জিং সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশের আলো। আমরা সবসময় সাংবাদিকদের পাশে আছি। বাংলাদেশের আলো সত্য প্রকাশে নির্ভিক। নানা চাপ উপেক্ষা করে পত্রিকাটি সত্য প্রকাশ করে। নিপীড়িত মানুষের দুর্দশার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশই পত্রিকাটিকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছে। পত্রিকাটি শতবছর ছাড়িয়ে যাক এটাই প্রত্যাশা করছি।

চিত্র প্রশিক্ষক ও দৈনিক আদিবাংলা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক অভিজিত রায়ের সভাপতিত্বে সাংবাদিক এবং নাট্যকর্মী আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী ও সাংবাদিক সবুজ গাজীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী, চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ রফিকুল হাসান ফয়সল,চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. গাজী মোঃ জসিম উদ্দিন মেহেদী হাসান, একাত্তর টিভির জেলা প্রতিনিধি আল আমিন ভূঁইয়া, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমীর মহা পরিচালক অ্যাডভোকেট রফিকুজ্জামান রনি।

বিকাল ৩ টায় একেই স্থানে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম।

তিনি বলেন, রচনা প্রতিযোগিতা শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের চিন্তা ও ভাবনা প্রকাশের একটি চমৎকার মাধ্যম। এটি তাদের সৃজনশীলতা ও মননশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আজকের দিনের জ্ঞানই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে। জেতার জন্য নয়, বরং অংশগ্রহণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা উচিত। কারণ, প্রতিটি অংশগ্রহণই নতুন কিছু শেখার সুযোগ এনে দেয়।
তিনি আরও বলেন, দৈনিক বাংলাদেশের আলো’ বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনির্ভর সংবাদ পরিবেশন করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমটি উন্নয়ন সাংবাদিকতায় অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবে বলেও আমার বিশ্বাস। পত্রিকাটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সংগৃহীত সংবাদের মাধ্যমে প্রকাশিত গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। সারাদেশের প্রতিনিধিগণ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বস্ত্রনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ করে গনমানুষের মন জয় করেছেন,বহুল আলোচিত পত্রিকা বাংলাদেশের আলো,সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আপোষহীন ও বদ্ধপরিকর।

রচনা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি ও ড্যাব চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মোবারক হোসেন চৌধুরী।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, খেলাধূলা, সঙ্গীত চর্চা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা- লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রচনা, হস্তলেখা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদের শিশুদের মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ হয়।’শুধু লেখাপড়ায় শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত না রাখার জন্য শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা শিক্ষক তাদেরকে আমি বলব, তারা এদিকে আরো মনযোগী হবেন। শুধু সারাদিন যদি ঐ-‘পড়’, ‘পড়’, ‘পড়’- বলতে থাকেন তাহলে এটা কারোই ভাল লাগে না।’

তিনি বলেন, আমি সত্যই অনেক আনন্দিত কারণ এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে অনেক মেধাবীরা উঠে আসবে। যাঁরা পর্যায়ক্রমে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পর্যায়ক্রমে তাঁদের সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে পারবে। যারা পুরষ্কার পাবে অবশ্যই যোগ্যতার নিরিক্ষেই পাবে। আমি তাদের উন্নতি কামনা করছি। যারা পুরস্কার পায়নি, ভবিষ্যতে তাদেরও সাধনার বলে প্রতিযোগিতার অংশ নেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি। কেননা জীবন একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। যেখানে নিজেকে তৈরি করতে হয় আগামী প্রতিযোগিতার জন্যে।

প্রতিযোগিতা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক
সাংবাদিক ও নাট্যকর্মী আলমগীর হোসেন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক সবুজ গাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁদপুর ৩ সদর আসনের এমপি প্রার্থী শেখ মোঃ জয়নাল আবেদীন, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল গাজী বাহার, চাঁদপুর শহর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান, চাঁদপুর জজ কোর্টের ভিপি জিপি, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. আলম খান মঞ্জু, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কবির হোসেন চোকদার, সিসিডিএ’র চাঁদপুর সদর উপজেলা সমন্বয়কারী নার্গিস আক্তার, এন টিভি চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সদস্য এ এইচ এম নিজাম উদ্দিন।

চিত্রাঙ্কন ও রচনার প্রতিটি বিষয়ে তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় স্কুলে অধ্যায়নরত প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত দুই শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সাদা কাগজের ক্যানভাস, রঙ-পেন্সিলের আঁকিবুকিতে মুখরিত হয় চাঁদপুর প্রেসক্লাব। এসব ক্ষুদে চিত্রশিল্পীরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তারা যথাক্রমে জাতীয় পতাকা, জাতীয় ফুল শাপলা, প্রাকৃতিক দৃশ্য এই কয়টি বিষয়ে উপর ছবি আঁকে।

এছাড়াও রচনায় শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছে। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত তিনটি গ্রুপে যথাক্রমে বিজ্ঞান ও বর্তমান বিশ্ব, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও সচেতনতা, নতুন বাংলাদেশ এই বিষয়বস্তুর উপর প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ৩২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় প্রত্যেকটি গ্রুপ থেকে ১০ জন করে বিজয়ীদের দেয়া হবে সনদপত্র ও সম্মাননা ক্রেস্ট।