ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর তরুণ পরিচালক রফিক শিকদার বহাল তবিয়তে

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী-চাঁদপুর
প্রকাশের সময়: রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ । ৪:২৮ অপরাহ্ণ
২০২৪ এর জুলাই- আগস্ট গণঅভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট সহচর প্রমাণ হওয়ার পরও বহাল তবিয়তেই আছেন  তরুণ পরিচালক রফিক শিকদার।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু ও তার পরিবারের সঙ্গে তার ছিল দহরম-মহরম সম্পর্ক। মন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে দাপুটে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে গড়েছেন  প্রচুর সম্পদের পাহাড়।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সাথে তার একাধিক ছবিও তার প্রমাণ বহন করে। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ছিল তার দারুন সখ্যতা। রফিক শিকদার যতবার আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের সাথে দেখা করেছেন ততবারই নিজের ফেসবুকে সেই ছবি প্রচার করে নিজের দাপট দেখাতেন। তার ফেসবুকে পোস্ট করা এমন অনেক ছবি এসেছে আমাদের হাতে।

তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে সে গত ১৬ মার্চ ২০২৩ লিখেছেন রাষ্ট্রপতি হাত ধরাই ব্যাপক উন্নয়নের প্রত্যাশায় পাবনাবাসী, ১ জুন ফেসবুকে শামসুল হক টুকুর ফুলের শুভেচ্ছার ছবি দিয়ে লিখেছেন আই লাভ ইউ, ৯ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি নিউজ তার টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন, ১৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির সিঙ্গাপুরের চিকিৎসায় যাওয়ার ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট রয়েছে, ১৯ নভেম্বর তার ফেসবুক টাইমলাইনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন আলহামদুলিল্লাহ পাবনা ৫ আসনে আরশাদ আদনান রনি ভাই।

আওয়ামীলীগের মধু শেষ করে এখন বিএনপির মধু আহরণের অপেক্ষায় রফিক শিকদার। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের সাথে সাথে আরিফ উদ্দিনের চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী পল্টি দিয়ে সাচ্চা বিএনপি নেতা বনে যাওয়ার চেষ্টা থেমে নেই তার।

তরুণ পরিচালক রফিক সিকদারের বিরুদ্ধে রয়েছি এফডিসির পরিচালক, অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের ব্যাপক অভিযোগ। এই পরিচালক অভিনয়ের অন্তরালে নায়িকাদের বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের কু- প্রস্তাব দেন।

তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবীণ অভিনেত্রী সুচরিতা। এই পরিচালকের বিরুদ্ধে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত নালিশও জানান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুচরিতা সেখানে উল্লেখ করেন, পাবনায় ‘বসন্ত বিকেল’ ছবির শুটিংস্থলে পরিচালক রফিক সিকদার তার সঙ্গে অসদাচরণ করেন। যার কারণে তিনি শুটিং রেখে ঢাকায় চলে আসেন। আরো অভিযোগ করেছেন কলকাতার নায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার। প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি ঢাকা গিয়েছিলাম আমার প্রথম বাংলাদেশী ছবি ‘হৃদয় জুড়ে’র শুটিং করতে এবং সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশে আমার প্রযোজনা টিম, সহশিল্পী’সহ সকলের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু ছবির পরিচালক রফিক শিকদার চূড়ান্ত অপেশাদার একজন মানুষ। অকারণেই উনি শুটিং-এর সময় আমার সাথে কাজের বাইরে অন্যান্য বিষয় নিয়ে গল্প করতে চাইতেন। সময়ে-অসময়ে মেসেজ করতেন নানা রকম। যেগুলো কাজ সংক্রান্ত নয়! মানে বাড়তি অ্যাটেনশন পাওয়ার চেষ্টা এবং অনেক সময়েই আমি এর প্রতিবাদও করেছি কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সংশোধন করেননি।’রফিক শিকদার এই নায়িকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় উনি আমাকে বার বার মেসেজ করতেন। বলতেন, উনি নাকি আমাকে মিস্ করছেন! একটা সময়ের পর আমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন! বারবার ব্লক করা সত্ত্বেও উনি থামেননি। উনি সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন আমাকে। এসব সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

রফিক শিকদারের সঙ্গে আলাপচারিতার কিছু স্ক্রিণশট নিজের ফেসবুক পাতায় শেয়ার করে প্রিয়াঙ্কা লিখেন, ‘আমি প্রমাণ স্বরূপ উনার করা হোয়াট্সঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মেসেজের স্ক্রিনশটও শেয়ার করছি তাহলেই আপনারা এই মানুষটির মানসিকতা বুঝতে পারবেন। এই লোকের কী বিচার হওয়া দরকার সেটা আমি আমার বাংলাদেশী বন্ধুদের উপরে ছেড়ে দিচ্ছি।
এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দোসর তরুণ পরিচালক রফিক সিকদারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আইনের আওতায় আনার জন্য দাবী জানিয়েছেন এফডিসির শান্তিপ্রিয় কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রাসেল মিয়া

প্রিন্ট করুন