খুঁজুন
সোমবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় নৃশংস বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার ফেনী

মোঃ আবদুল রহিম, ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১:৩৬ অপরাহ্ণ
গাজায় নৃশংস বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার ফেনী
গাজায় ইসরাইলের চলমান নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ফেনী জেলাজুড়ে চলছে প্রতিবাদ ও সংহতি কর্মসূচি। ফেনী শহর ও সোনাগাজী উপজেলায় পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে সংহতি প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়। ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি
বাদ যোহর ফেনী শহরের ঐতিহ্যবাহী জহিরিয়া মসজিদ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন জাতিসংঘ জবাব চায়’ ‘জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই’ ‘এ জিহাদে জিতবে কারা বিশ্বনবীর সৈনিকেরা’, ‘বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো, ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর’, ‘ইসরাইলের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। কোথায় মানবাধিকার?
গাজায় চলমান নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ ও হামলার প্রতিবাদে ফেনী জেলাজুড়ে চলছে প্রতিবাদ ও সংহতি কর্মসূচি। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে সংহতি প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়
সংহতি প্রকাশ করল ফেনীর শিক্ষার্থীরা
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী পালিত ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়েছে ফেনীর শিক্ষার্থীরা।
আমাদের শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই ও একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে শারীরিক ক্রিয়া যেমন ব্যাহত হয়, ঠিক তেমনি একজন মুসলিম ভালো না থাকলে অন্যরাও ভালো থাকতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমাদের লজ্জা অনুভব হয় যে, আমরা এখনও এই অসহ্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারছি না। আমরা ভুলে যেতে বসেছি মুসলমানদের পুরনো ঐতিহ্য।
ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের প্রতিনিধি ওসমান গনি রাসেল বলেন, আজ ফিলিস্তিনের মাটিতে যে নির্মম গণহত্যা চলছে, তা কেবল ফিলিস্তিনিদের উপর আঘাত নয়, বরং এটি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর উপর একটি চরম অবমাননা। শিশু, নারী, নিরীহ মানুষদের রক্তে আজ রঞ্জিত গাজা। অথচ বিশ্ব বিবেক চুপ করে আছে। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা সবাই আজ নিশ্চুপ। ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের আরেক প্রতিনিধি নুর নবী হাসান বলেন, জাতিসংঘ আজ নির্বিকার। তারা মুখে শান্তির কথা বললেও কাজে নিষ্ক্রিয়। আর মুসলিম রাষ্ট্রগুলো যেন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন একটি রাষ্ট্রও দৃশ্যমান ভূমিকা নিচ্ছে না। এই নীরবতা একধরনের অপরাধ। আজ যদি আমরা চুপ থাকি, তবে কাল ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আমরা বিশ্বাস করি, যদি মুসলিমরা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে ওই জালিম শত্রুরা পালানোরও জায়গা পাবে না।
জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের প্রতিনিধি ওসমান গনি রাসেলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবী ওমর বিন কাসেম সিফাত, খন্দকার সুমন, বিশিষ্ট সংগঠক আজিজ উল্যাহ আহমদী, কবি ও সংগঠক স্বাধীন মুরশিদ। এতে উপস্থিত ছিলেন নিশাদ আদনান, পিয়াস, জাহাঙ্গীর সহ স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
একইদিন বিকেলে সোনাগাজী উপজেলায় সোনাগাজী স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের ব্যানারে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোনাগাজী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদে আসরের নামাজ শেষে মিছিলটি শুরু হয়ে পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
এ সময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সোনাগাজী ব্লাড ডোনেট অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াছিন মাহমুদ, সোনাগাজী স্বেচ্ছায় রক্তদান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলমগীর হোসেন, স্বপ্নচারী মানব কল্যাণ সংস্থার সহ সভাপতি জিয়া উদ্দিন হৃদয়, মানবতার ডাক’র সহসভাপতি এমদাদ হোসেন সুজন, মুনস্টারের আবুল কালাম আজাদ, নিসআর শাহাদাত হোসেন সজিব, ফেনী সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী আবুল কামাল আজাদ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক উপজেলা সভাপতি আব্দুল মোমিন শিক্ষাঘর সোনাগাজীর সভাপতি হোসাইন আজাদ, স্বপ্নসিড়ির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম হাসান, স্বপ্নচারীর সভাপতি নাজমুল ইসলাম,
শিক্ষা ঘরের শিবলু, ছাত্রদল নেতা বেলাল হোসেন রাহাদ, গিয়াস উদ্দিন হৃদয়, মানবতার ডাক’র এএইচ রাসেল, পাঠকবন্ধুর নির্বাহী সদস্য দেলোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নেয়। সরকারি কলেজ, ফেনী ইউনিভার্সিটি ও ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে সংহতি প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।
ফেনী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে, আমরা ফেনী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান গণহত্যা, মিসাইল হামলা, রাসায়নিক গ্যাস আক্রমণ এবং সীমাহীন সহিংসতার মুখে আমরা নীরব থাকতে পারি না। ২০২৫ সালের ৭ই এপ্রিল, সোমবার, আমরা পুরো বিশ্বের সাথে একাত্মতা পোষণ করে গে-াবাল স্ট্রাইক ফর গাজায় অংশ নিচ্ছি। ক্রমাগত বোমাবর্ষণ, অনাহার এবং বাকস্বাধীনতা হরণের মাধ্যমে যে নিপীড়ন চলছে ফিলিস্তিনে, তা উপেক্ষা করা যায় না। এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সংকট নয়-এটি একটি গভীর নৈতিক সংকট। এখনই সময় সোশ্যাল মিডিয়ার গণ্ডি ছাড়িয়ে একত্রিত হওয়ার, প্রতিবাদ করার, সংগঠিত হওয়ার এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।
বিবৃতিতে তারা আরও উল্লেখ করে, আমরা গাজায় ইসরায়েলের পরিচালিত গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানাই, পাশাপাশি নিন্দা জানাই যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য পরাশক্তিদের অকুন্ঠ সমর্থনেরও। একইসাথে, আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই সেইসব রাষ্ট্রের, বিশেষ করে আরব দেশগুলোর, যারা এই নির্মমতার সময় নীরব থেকেছে। তাদের নিষ্ক্রিয়তাই এই গণহত্যাকে অব্যাহত রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা, ফেনী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, গাজার পাশে আছি। ৭ই এপ্রিল চলুন আমরা এক কণ্ঠে আওয়াজ তুলি ন্যায়বিচার, শান্তি এবং মানবতার পক্ষে।
এদিন একই ধরনের বিবৃতি দিয়ে সংহতি প্রকাশ করে ফেনী ইউনিভার্সিটি ও ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

পিআর পদ্ধতি সহ ৫ দফা দাবিতে গাইবান্ধায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান

শাহ্ পারভেজ সংগ্রাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
   
পিআর পদ্ধতি সহ ৫ দফা দাবিতে গাইবান্ধায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ও ফেব্রুয়ারিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সহ পাঁচ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে গাইবান্ধা জেলা শাখা।

‎বিকেলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় পৌর পার্কে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমেদের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
‎জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল করিম সরকারের সভাপতিত্বে স্মারকলিপি পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ, মো. মাজেদুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা জহুরুল হক সরকার, নায়েবে আমীর মাওলানা নজরুল ইসলাম লেবু, সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ রোকনুজ্জামান ও ফয়সাল কবির রানা, পৌর জামায়াতের আমীর মো. ফেরদৌস আলম এবং মাওলানা নুরুল ইসলাম মণ্ডল প্রমুখ।
‎বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে জুলাই সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, সকল দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি ও খুনি-ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
‎তারা আরও বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার ঘটানো গেলে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে। বক্তারা জনগণের গণদাবি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করতে দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

গাইবান্ধায় হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত

শাহ্ পারভেজ সংগ্রাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪২ অপরাহ্ণ
   
গাইবান্ধায় হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বিরসহ চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম এই নির্দেশ দেন। মোসাব্বির সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
এবিষয়ে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার হাফিজুর রহমান জানান, আজ রোববার মামলার চার্জশিট শুনানির দিন ধার্য্যে ছিল। মোট ১৬ জন আসামির মধ্যে ১৪ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের চারজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তারা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন, সুলভ মিয়া খাজা, শাহআলম ও লিটন মিয়া।
এর আগে চেয়ারম্যান মোসাব্বির ২০২১ সালে উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। তবে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ তাঁকে প্রথম দফায় কারাগারে পাঠান।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৭ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া বাজারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী রোকন সরদারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ সময় ইউপি সদস্য আশিকুজ্জামান ও জিল্লুর রহমান আহত হন। নিহত রোকন সরদার ওই ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামের আবদুর রউফ সরদারের ছেলে।
ঘটনার পর নিহতের ভাই রোমান সরদার বাদী হয়ে চেয়ারম্যান মোসাব্বিরসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০–১২ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জনবল সংকটে ব্যাহত চাঁদপুর ডিএনসি’র মাদকবিরোধী কার্যক্রম

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী, চাঁদপুর
প্রকাশিত: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ণ
   
জনবল সংকটে ব্যাহত চাঁদপুর ডিএনসি’র মাদকবিরোধী কার্যক্রম
মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। নিমিষেই যেকোনো পরিবার মাদকের ছোবলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

বিশেষত যুব সমাজ এ বিপদের প্রধান শিকার হয়ে পড়ছে। মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে সমাজকে রক্ষা করতে সরকারি সংস্থা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। চাঁদপুর জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মাদক নির্মূলে। তবে জনবল সংকটের কারণে কার্যক্রমে মারাত্মক বেগ পেতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় আশানুরূপ ফল মিলবে বলে আশাবাদী কর্মকর্তারা।

পাশাপাশি অভিযানের সময় আত্মরক্ষার্থে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতিও শিগগির পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশার কথা জানান চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। সম্প্রতি ডিএনসি সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর জেলায় মোট ৮টি উপজেলা রয়েছে। এই ৮ উপজেলাকে একটি অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।

বর্তমানে ২৬ জন জনবলের মধ্যে ১৮ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ২ জন সিনিয়র ইন্সপেক্টর ও ১ জন সাব-ইন্সপেক্টর আছেন, যাঁরা টিম লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় মামলার সাক্ষ্য প্রদানের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় প্রায় ১২ থেকে ১৫ দিন। এছাড়াও ১টি গাড়ী ও ১ জন চালক দিয়েও পুরো জেলায় অভিযান নিয়ন্ত্রণ করতেও অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। ফলে অভিযান পরিচালনার কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের ইচ্ছা ও সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় দক্ষ ও সাহসী জনবলের অভাবে অভিযান পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ে।

এজন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছি। বর্তমান সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত আন্তরিক। যদি প্রতি উপজেলায় অন্তত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি করে কার্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়, তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি প্রসঙ্গে মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা অনেক সময় অত্যন্ত দুর্ধর্ষ মাদক কারবারির বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। আত্মরক্ষার্থে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় কিছু সময় বিপদের মুখে পড়তে হয়। এজন্য আত্মরক্ষার স্বার্থে এবং সফল অভিযানের জন্য অনুমতি চেয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে, আশা করছি শিগগিরই অনুমতি পেয়ে যাবো। অন্যদিকে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সূত্রে আরো জানা যায়, গত মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ছয় মাসে মোট ৭২৫টি অভিযান পরিচালনা করে ৭২টি মামলা দায়ের এবং ৭৪ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে ৭,৫১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৮ কেজি ৮৮০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৩ হাজার ৩০ টাকা নগদ অর্থ, ৮টি মোবাইল ফোন ও মাদক সেবনের বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও মাদকের কুফল ও ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেমন হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা, লেডি দেহলভী, এম এম নুরুল হক, ডি এন, বলাখাল চন্দ্রবান বালিকা, আইনগিরী উচ্চ বিদ্যালয়, বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, গল্লাক দারুচ্ছুন্নাত আলিম মাদ্রাসা,পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা, অভিভাবক সমাবেশ, মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল ম্যাচসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেছেন, আমি জনবল সংকটের ব্যাপারটা অবগত আছি। আসলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এটা একটা বড় সমস্যা।

আমি বিভাগীয় সভা গুলোতেও এ ব্যাপারে আলোচনা করেছি। এছাড়াও ডিসি সম্মেলনেও এ ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবো। আশাকরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। চাঁদপুর ডিএনসি’র কর্মকর্তারা জানান, জনবল সংকট নিরসন ও পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সরবরাহ পেলে মাদকমুক্ত চাঁদপুর গড়ে তুলতে আরও কার্যকরভাবে কাজ করা সম্ভব হবে।