ভুয়া মাস্টার রোলে ডিলারের বিরুদ্ধে কর্মসূচীর চাল বিক্রির অভিযোগ

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহর ছত্রছায়ায় ভুয়া মাস্টার রোল তৈরি করে অবৈধভাবে রাতের আধারে সরকারি চাল বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার আবু রায়হান মোবারকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর এমন লিখিত অভিযোগ করেন কলমাকান্দার চান্দুয়াইল গ্রামের মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে রাকিব মিয়া।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার আবু রায়হান মোবারক নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বিশাড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে চাল বিক্রির সময় সাধারণ ডিলার আবু রায়হানকে জনতা হাতেনাতে ধরে ইউএনও কাছে সোপর্দ করেছিল। সে তার অপকর্ম দেদারসে চালিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে কানাঘুষা চলছে। দুর্নীতিবাজ ডিলারকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন ভালো, সৎ ও চরিত্রবান ডিলার নিয়োগ দেওয়ার জোর সুপারিশ করেন অভিযোগকারী রাকিব মিয়া।
এ বিষয়ে ডিলার আবু রায়হান মোবারক বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর এক কেজি চাল বাহিরে রাখার সুযোগ নাই। মাস্টাররোলের এক এক জন করে উপকারভোগীদের ফোনে যাচাই করে দেখবেন তারা চাল পেয়েছে কিনা। মান ইজ্জতটা আগে, এতো টাকা-পয়সার দরকার নাই। আগে থেকেই রাকিব মিয়াসহ ১৬ জন সামাজিকভাবে হেনস্থা করার জন্য আমার পেছনে লেগে আছে। তারাই ওএমএস এর চাল বিক্রি করছে। তারা ১৬ জনের সিন্ডিকেট করে মাল (চাল) কোথা থেকে কিভাবে নেন। এই সিন্ডিকেট মূলত আমাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহর সাহেবের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি প্রশিক্ষণে আছেন, একটু পরে কথা বলবেন বলে জানান। অনেকক্ষণ পরে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি। ফের অপেক্ষার পর আবার ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল তালিকা অনুযায়ি বিতরন করা হয়। খাদ্যবান্ধবটা গতকাল (সোমবার) থেকে শুরু হয়েছে। অভিযোগে যোগসজসের বিষয়টির সাথে আমাদের সংশ্লষ্টতা নাই এবং এটা ভুয়া।
‘ইউএনও ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ‘অভিযোগটি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে জানাবে। এরআগে এই ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় তার ওএমএসের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।’
‘অভিযোগে খাদ্য কর্মকর্তা শহিদুল্লাহর সাহেবের যোগসাজসে নাম রয়েছে। তাকেই তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ’ প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে ইউএনও তৎক্ষনিকভাবে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে প্রদান করেন।
‘অভিযোগে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা থাকা কথা উল্লেখ রয়েছে বিষয়টি কিভাবে দেখবেন’ প্রতিবেদকের এ প্রশ্নে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, আজকে (মঙ্গলবার) আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সকল পক্ষের সাথে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন